ভারতীয় চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী অভিনেতা বিশ্বজিৎ এবার পেতে চলেছেন জীবন-শ্রেষ্ঠ সম্মান বা লাইফটাইম এচিভমেন্ট এওয়ার্ড৷ এই পুরস্কার তাঁকে দেওয়া হবে চলতি “গোয়া আর্ন্তজাতিক চলচ্চিত্র উৎসব”-এ৷ আজ এ’কথা জানান ভারতের তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকার৷ তিনি সরাসরি মুম্বাইতে বিশ্বজিৎকে ফোন করে আনন্দ-সংবাদটি দেন৷ উত্তরে বিশ্বজিৎ বলেন, “আমি আপ্লুত৷ তবে, আমার শিকড় তো বাংলায়৷ তাই, পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত দর্শকদের আমি প্রণাম ও অভিনন্দন জানাচ্ছি৷”
গোয়ার বর্ণাঢ্য এই বাৎসরিক চলচ্চিত্র উৎসবটি শুধু ভারতে নয়, গোটা পৃথিবীতেই অত্যন্ত জনপ্রিয়৷ যা শুরু হয়েছে গতকাল অর্থাৎ ১৬ই জানুয়ারি সন্ধ্যায়৷ তবে, এ’বছর অতিমারির জন্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি হয়েছে ভার্চুয়াল৷ তাই, দেশবিদেশের কোনও তারকাকেই মঞ্চে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি৷
প্রসঙ্গত বলা দরকার, বিশ্বজিৎ শুধু একজন জনপ্রিয় অভিনেতাই নন, একাধারে তিনি প্রযোজক, পরিচালক, গায়ক এবং রাজনীতিবিদও বটে৷ তাঁর জন্ম ১৯৩৬ সালের ১৪ই ডিসেম্বর৷ তাঁর প্রথম বাংলা ছবি “কংস” মুক্তি পায় ১৯৫৮ সালে৷ তারপর থেকে বিশ্বজিৎ বাংলা সিনেমায় ধীরে ধীরে বেড়ে উঠতে থাকেন৷ তাঁর হিট ছবিগুলির মধ্যে আছে মায়ামৃগ, দুই ভাই, শেষ প্রশ্ন, দাদাঠাকুর, নবদিগন্ত, চৌরঙ্গী, মণিহার, গড় নাসিমপুর, কুহেলি, আমি সিরাজের বেগম, অমরগীতি ইত্যাদি৷ বম্বেতে (তখনও মুম্বাই নামকরণ হয়নি) তাঁর প্রথম হিন্দি ছবি ছিল “বিস সাল বাদ”৷ সেটা ১৯৬২ সালের কথা৷ প্রথম ছবিই সুপারহিট৷ ফলে, তারপর থেকে ২০০৯ সাল পর্য্যন্ত প্রায় একটানা পঞ্চাশ বছর বলিউডে বিশ্বজিৎ রাজত্ব করে গেছেন৷ এরই মধ্যে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনায় তৈরি “রক্তাক্ত বাংলা”-তেও তিনি অভিনয় করেন৷ তাঁর পরিচালিত প্রথম হিন্দি ছবি “কহতে হ্যায় মুঝকো রাজা”৷ নির্মিত হয় ১৯৭৫ সালে৷
রাজনীতির আঙিনায় বিশ্বজিৎকে প্রথম দেখা যায় ২০১৪ সালে৷ ঐ বছর ভারতের সাধারণ নির্বাচনে তিনি তৃণমূলের টিকিটে নয়াদিল্লি থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করেন৷ কিন্তু, পরাজিত হন৷ এরপর ২০১৯ সালে তিনি যোগ দেন বিজেপি-তে৷ এখনও সেই দলেই আছেন৷
আশা করি, এই তথ্য সবারই জানা যে, বিশ্বজিৎ বাংলা ছবির সুপারস্টার প্রসেনজিতের বাবা৷