দুই দিন বিরতির রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় সংসদের মুলতবি অধিবেশন শুরু হয়েছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে চলতি সংসদের সদস্য মোহাম্মদ নাসিম এবং শেখ মো. আব্দুল্লাহ’র মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত আছেন।
সংসদীয় রেওয়াজ অনুযায়ী, অধিবেশনের শুরুতে সম্পূরক কর্মসূচী শোক প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করেন স্পিকার। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের জীবন বৃত্তান্ত তুলে ধরেন। এসময় ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ’র জীবন বৃত্তান্তসহ শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এরপর মোহাম্মদ নাসিমের জীবন ও কর্মের উপর আলোচনা শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, (আমার) চলার পথ খুব সহজ ছিল না। বার বার বাধা। কিন্তু যে কয়টা মানুষ আমার পাশে থেকেছে, চলার পথে সমর্থন দিয়েছে তাদের মধ্যে দুজন মানুষকে একই দিনে হারালাম। এটাই সব থেকে কষ্টের।
তিনি বলেন, নাসিম ভাইয়ের ওপর যে অত্যাচার হয়েছে…, আইয়ুব খানের আমল থেকেই আমাদের সেই আন্দোলন এবং অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশেও তার বাবাকে তো হত্যা করা হলোই, এরপরে যখন নিজে রাজনীতি করতে আসলেন…, সে অত্যন্ত সাহসী ছিলো। যেকোনো অবস্থা মোকাবেলা করতে যেতো। এজন্য বার বার তার ওপর হামলা হয়। জিয়াউর রহমানের আমলে যেমন অত্যাচার হয়েছে, জেনারেল এরশাদ সাহেব যখন ক্ষমতায় তখনও। মার্শাল ল জারি করার পর সাভার স্মৃতিসৌধে আমাদের নেতারা যখন সেখানে ফুল দিতে যায় তখন সেখানে তাদের হকিস্টিক দিয়ে পেটানো হয়েছিল। তখন তার পিঠে-ঘাড়ে আঘাত লেগেছিল। এরপর খালেদা জিয়ার সময়েও তাকে অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হল। সেসময় তার ব্রেন স্ট্রোক হয়। ২০০৭/৮ এ ব্রেনস্ট্রোক করে (জেলে) পড়ে ছিলো। ওই সময় সালমান এফ রহমানও গ্রেফতার হয়েছিলো। তার জন্য তার ছেলে একটা অ্যাম্বুলেন্স জেলগেটে সবসময় প্রস্তুত রাখতো। ওই অ্যাম্বুলেন্সটা দিয়েই তখন তাকে (নাসিম) দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়েছিলো। সময়মতো হাসপাতালে নিতে পেরেছিল বলেই ওই যাত্রাই নাসিম ভাই বেঁচে গিয়েছিল। কিন্তু ওই স্ট্রোকে তার একটা দিক প্যারালাইজড হয়ে যায়।
তিনি বলেন, এই ঘটনা একইভাবে দুজনের বেলায় ঘটেছিল। আরেকটা হল- মহিউদ্দিন খান আলমগীর। সেও স্ট্রোক করে পড়ে ছিলো। তাকেও সালমানের অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সময়মতো তাদের যদি হাসপাতালে নিয়ে না যাওয়া হতো তাহলে হয়তো সেখানে মরে পড়ে থাকতে হতো। এরকম একটা অবস্থা ছিলো।
করোনা পরিস্থিতিতে গভীর শোকার্ত পরিবেশে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় অংশ নেন অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, ডা. হাবিবে মিল্লাত, মৃণাল কান্তি দাস প্রমুখ।