অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কর্তৃপক্ষের দেওয়া রবির ফ্রী ইন্টারনেট ডাটার সুফল পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। ফ্রি ডাটা নিয়ে উল্টো ভোগান্তিরই শিকার হচ্ছেন তারা।
মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবির সাথে চুক্তি অনুযায়ী ১৯৯ টাকায় ৩০ জিবি দেওয়ার কথা থাকলেও সেবাটি পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। ডেটা প্যাক সুবিধার জন্য নতুন সিম কিনে রেজিস্ট্রেশন করার পরও ফিরতি বার্তা না আসা, আইটি অফিসে যোগাযোগ করে সমাধান না পাওয়াসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১০০ টাকা ভুর্তকি দেওয়ার কথা থাকলেও সেটি পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, গত ৪ নবেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবি আনুষ্ঠানিকভাবে উপাচার্যের সভা কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমানের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ড. কামালউদ্দীন আহমদ এবং রবি’র চিফ এন্টারপ্রাইজ বিজনেস অফিসার জনাব আদিল হোসেন নোবেল নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছিলেন।
চুক্তি সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১৯৯ টাকার ৩০ জিবি ডাটা প্যাকেজের মধ্যে শিক্ষার্থীরা ৯৯ টাকা প্রদান করবে এবং বাকী ১০০ টাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রবি’কে সরাসরি প্রদান করবে। এই চুক্তির আওতায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ১৯৯ টাকায় এই সুবিধা উপভোগ করবেন।
করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সুবিধার বিষয় বিবেচনা করে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে রবির সেবাকেন্দ্রে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে এ স্পেশাল প্যাকেজ নিতে পারবে। প্যাকেজটির মেয়াদ ছিল ৫ নবেম্বর ২০২০ থেকে ৫ জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত। কিন্ত এই চুক্তির দেড় মাস শেষ হলেও ডাটা প্যাকটির সুবিধা পাননি শিক্ষার্থীরা।
ভোগান্তির ব্যাপারের ক্ষোভ করে অর্থনীতি বিভাগের ২০১৫-১৬ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ ফাহাদ বলেন, করোনায় আমাদেরকে দিয়ে এই অর্থনৈতিক টানাপোড়নের সময় অনর্থক টাকা রিচার্জ করালো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আমি সিম কিনে সব প্রসেসিং করলাম কিছুই হল না; রেজিষ্ট্রেশন না করতে পেরে। রেজিষ্ট্রেশন অনলাইনে করা সম্ভব হয় নি। সরাসরি আইটি অফিসে গিয়েও কোন কাজ হয় নি, তারা আইটি অফিসার সাইফুল ভাইয়ের নাম্বার দিলো, কল দিলাম বলেছে সমাধান করবে, শেষে কোন কিছুই হয়নি। এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কি আমার টাকা ফেরত দেবে?
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ ২০১৭-১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অনলাইন ক্লাসের জন্য ডাটা কেনা অনেক ব্যয়বহুল তবুও আমরা ক্লাস করে যাচ্ছি। কিন্ত যখন শুনেছি রবির সাথে চুক্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বল্প মূল্যে ডাটা দিবে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া শর্ত অনুযায়ী রবি সিম কিনেছি। ডাটা প্যাক নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছি কিন্ত এখনো কোনো কনফার্মেশন মেসেজ পাইনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী অহিদূর রহমান বলেন, গ্রামে থাকি ওয়াইফাই সুবিধা নেই।ডাটা কিনে ক্লাস করা অত্যন্ত কষ্টকর। আমি সিম কিনে ১৯৯ টাকা রিচার্জ করেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শর্ত অনুযায়ী ১৯৯ টাকা দিয়ে ৩০ জিবি ডাটা প্যাক দেওয়ার কথা পাশাপাশি ১৯৯ টাকার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূর্তকি ১০০ টাকা রবি থেকে ফেরত দেওয়ার কথা কিন্ত সেই ১০০ টাকা এখনো ফেরত আসেনি। জানুয়ারীর ৫ তারিখ এই প্যাকেজের মেয়াদ শেষ, এরপর তো আর কোনো সম্ভাবনাই নেই।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘এরকম কোন অভিযোগ আমি শুনি নাই। তুমি অর্থ দপ্তরে যোগাযোগ কর। তবে আইটি গত জটিলতার জন্য তিনি শিক্ষার্থীদেরকে আইটি দপ্তরে যোগাযোগ করতে পারে।
এবিষয়ে মন্তব্য জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ড. কামালউদ্দীন আহমদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।