শিবালয় উপজেলার শিবালয় ইউনিয়নের বড়বোয়ালী গ্রামের মধ্যে প্রায় একশ বিঘা কৃষি জমি এখন পানির নিচে ডুবে আছে । পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় ৮ বছর ধরে ঐ গ্রামের জমিগুলো পানিতে তলে থাকার কারণে কৃষকেরা ফসল উৎপাদন করতে পারছে না । ফলে কৃষকের বুকে জমছে চাপা আর্তনাদ।
ভুক্তভোগী শাহিনুর ইসলাম শাহিন অভিযোগ করে বলেন, বর্ষা মৌসুমে উপজেলার বড়বোয়ালী গ্রামের এই চকে রাস্তার উপর দিয়ে পানি ঢুকে চকে পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। চকের চারপাশ পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় বর্ষার পানি আর বের হতে পারে না । সারাবছর এভাবেই পানিতে পরিপূর্ণ থাকে। গ্রীষ্মকালীন সময়ে পানি কিছু টা কমলেও সব জমিতেই হাটু পানির উপরে পানি থাকে।
স্থানীয় কৃষক ফজলু জানান, যেখানে সেখানে যে যার মতো বাড়ি-ঘর নির্মাণ করা আর পূর্বে যে জায়গা দিয়ে পানি নিস্কাসনের জন্য পাইপ বসানো ছিলো গত ৭ বছর আগে সে জায়গায় এক ব্যাক্তি মাটি ফেলে সেই পাইপ বন্ধ করে দেয়। এতে ঐ বছর থেকে আমাদের এই জমির পানি আর বের হয় না আমরা এখানে আর ধান,মরিচ সহ কৃষি পন্য চাষাবাদ করতে পারি না।
ষাটোর্ধ্ব কৃষক জলিল শেখ বলেন এই জায়গায় আগে আমরা বরো ধান, আউস ধান, মরিচ, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুন আবাদ করতাম। গত ৭/৮ বছর যাবৎ এই জায়গার পানি বের হয় না তাই আবাদও করতে পারি না। সরকার যদি কোনো রকম ভাবে এই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দিতেন তাহলে এই শত বিঘায় আবারও বিভিন্ন কৃষি পন্য আবাদ করা যেতো।
সোমবার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, শিবালয় উপজেলার বড়বোয়ালী ২ নং ওয়ার্ড এ এই জায়গায় শত বিঘা কৃষি জমি রয়েছে। ঐ কৃষি জামির পানি নিষ্কাশনের পথ স্থানীয় এক ব্যক্তি তার জায়গায় মাটি ফেলে বন্ধ করায় জমিগুলো বর্তমান পানির নিচে বছরের পর বছর ধরে ডুবে আছে । জমির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকার ফলে প্রায় সাত বছর ধরে ঐ গ্রামের কৃষকেরা তাদের জমিতে ফসল উৎপাদন করতে পাড়ছেন না। পানি বন্দি থাকার ফলে ঐ এলাকার আশেপাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছও মারা যাচ্ছে এবং পুরো জায়গায় কচুরিপানা তে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে যার কারণে ঐ জায়গার আশেপাশের এলাকায় মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়ে।
এছাড়াও পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় কচুরিপানার কারণে সম্পুর্ন পানি পচে যায় এবং ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে যায়। এ কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের গোছল ও রান্নার জন্য পানির অভাবও দেখা দিয়েছে ।
এছাড়া বর্ষা মৌসুমে ঐ জায়গায় রাস্তার উপর দিয়ে পানির স্রোত প্রবাহিত হবার সময় প্রতিবছরই গ্রামের এক মাত্র রাস্তাটি ভেঙ্গে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। এর ফলে কৃষকদের উৎপাদিত অন্য জমি গুলো থেকে ধান, আলু ও অন্যান্য কৃষি পণ্য হাট-বাজারে নিয়ে যেতে নানা সমস্যায় পড়তে হয় পাড়ার কৃষকদের।
এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে ঐ গ্রামের বাসিন্দরা স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারদের দ্বারে দ্বারে ধর্না দিয়েও তার এখনো কোন সমাধান পাননি।
এলাকাবাসী অনেকেই অভিযোগ করে বলেন আমরা ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান মেম্বার নির্বাচন করি কিন্তু তারা আমাদের কোনো উপকারেই আসে না তাদের জনপ্রতিনিধি হওয়ার কি দরকার ছিলো যদি মানুষের জন্য কাজই না করে।
অত্যান্ত ক্ষোভের সাথে কৃষক জলিল উদ্দিন বলেন আমরাও দেখমু নে সামনে ভোট আইছে এইবার আমরাও খেয়াল রাখমুনে।
এ বিষয়ে শিবালয় ৩ নং মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন আলালের সাথে কথা বলে তিনি এই প্রতিবেদক কে জানান আমি নিজে ঐ জায়গায় গিয়েছি আসলে ঐ জায়গায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করা হলে ওখানে কোনো ফসলাদি উৎপাদন সম্ভব নয়। আমাদের পরিষদে এই পানি নিষ্কাশনের ব্যপারে বর্তমানে কোনো বাজেট নেই আপনি উপজেলায় যোগাযোগ করুন। যদি কখনও বাজেট আসে তখন চেষ্টা করবো।

তবে পুরাতন একটি জায়গায় পানি নিষ্কাশনের জন্য চোঙ্গা ছিলো দেখি সেটা বসিয়ে কোনো ব্যবস্থা করতে পারি কি না।