1. boyd94289@gmail.com : Ayon Islam : Ayon Islam
  2. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  3. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  4. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
  5. bangladeshbulleting646@gmail.com : Sohel Desk : Sohel Desk
বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩১ অপরাহ্ন

মাল্টা চাষে ভাগ্য ফেরানোর স্বপ্ন দেখছেন প্রবাস ফেরৎ সাচ্চু

  • সময় : বুধবার, ২৬ আগস্ট, ২০২০
  • ২৯৮

চৌদ্দ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে সিঙ্গাপুর থেকে ফেরা শহিদুল ইসলাম সাচ্চু এখন মাল্টার ফলনে ভাগ্য ফেরানোর স্বপ্ন দেখছেন।

তিনি ২০১১ সালে দেশে ফেরেন। ফেরার পর দেশেই কিছু করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। দিলেন গেঞ্জির (টি-শার্ট) তৈরির কারখানা। সফল হলেন না। ভাবলেন, বাণিজ্যিকভাবে ছাগল পালন করবেন। বিভিন্নজনের সাথে পরামর্শ করলেন। অনেকেই সায় দিলেন না। তারপরও ছাগলের খামার দেখতে গেলেন রাজবাড়ির পাংশায় সবুজ এগ্রো খামারে। সেখানে গিয়ে দেখলেন মাল্টার বাগান। সঙ্গী বন্ধুরা মিলে সিদ্ধান্ত নিলেন মাল্টার বাগানই করবেন।

৬ বন্ধু মিলে জমি ভাড়া নিয়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বরার এলাকায় ১৩ বিঘা জমির উপর গড়ে তুলেছেন দুটি মাল্টা বাগান।

বাগানে বারি-১ ও ভারতীয় এই দু’টি জাতের মাল্টার গাছ লাগিয়েছেন তারা। ইতোমধ্যে তাদের বাগানে মাল্টাও ধরেছে। বাগানের গাছে গাছে থোকায় থোকায় সবুজ মাল্টা আর মাল্টা। আর কিছুদিন পর থেকে বিক্রি শুরু হবে। এখন এই মাল্টা বাগানকে ঘিরেই শহীদুলের স্বপ্ল।

শহিদুল ইসলাম সাচ্চু মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানার কোলা এলাকার মো. শাহজাহান খানের ছেলে। তিনি ২০১০ সাল থেকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ী এলাকার বাড়ি করে বসবাস করছেন।

তার অন্য ৫ বন্ধুরা হলেন- আনোয়ার হোসেন মিঠু, মেজবা উল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, মো. মাসুম ও মো. মনিরুজ্জামান। ঢাকায় বসবাস করেন। তাদের কেউ চাকরিজীবি ও কেউ ব্যবসায়ি।

শহিদুল ইসলাম সাচ্চু জানান, তিনি ২০১৭ সালে প্রথমে ৩ বিঘা জমি বাৎসরিক ২০ হাজার টাকা করে ১০ বছরের জন্য ভাড়া নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা শুরু করেন। সে বাগানে প্রথমে ১৫০টি চারা রোপণ করেছিলেন। আশানুরূপ হওয়ায় পরের বছর ওই বাগানের কিছু দূরে একইভাবে আরো ১০ বিঘা জমি ভাড়া নিয়ে তাতে মাল্টার চারা রোপণ করেন। তার দুই বাগানে মাল্টা গাছের সংখ্যা বর্তমানে ১৩শ। এর মধ্যে ১২শ বারি-১ জাতের এবং একশ ভারতীয় জাতের।

মাল্টা বাগানে কথা হয় শহিদুল ইসলাম সাচ্চু সঙ্গে। এসময় তিনি মাল্টা চাষ নিয়ে তার স্বপ্নের কথা জানান।

সাচ্চু জানান, তিনি ১৯৯৭ সালে কাজের সন্ধানে সিঙ্গাপুর যান। কিছু টাকা জমিয়ে ২০০০ সালে কোনাবাড়ি এলাকায় জমি কিনেন এবং ২০০৭ সালে দিকে সেখানে বাড়ি করেন। ২০১১ সালে দেশে ফেরেন।

সাচ্চু বলেন, স্বজনদের ছেড়ে আবার প্রবাসে যেতে মন চাইছিল না। তাই দেশে কিছু করার চিন্তা করি। মিনি গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করি। লোকসানের কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। বানিজ্যিকভাবে ছাগলের ব্যবসা করার চিন্তা করি। অনেকেই পরামর্শ দেয় কিছু হয়ে গেলে বড় অংকের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। পরে ২০১৭ সালে মাল্টা চাষ শুরু করি। বাগানের নাম দেই ‘প্রান্তিক দেশাল এগ্রো’। বাগানে প্রতিটি চারায় পাঁচশ টাকার মতো লেগেছিল।

প্রশিক্ষণ সম্পর্কে জানতে চাইলে জানান, আনুষ্ঠানিক কোন প্রশিক্ষণ তিনি নেননি। ইউটিউব থেকে মাল্টা চাষ সম্পর্কে ধারণা নিয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন নার্সারিতে যোগাযোগ করে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেছেন। তিনি আরো জানান, দুটি বাগানে এ পর্যন্ত ১৫ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। তা ছাড়া প্রতি বছর জমি ভাড়া, কর্মচারী, সার ও অন্যন্যা পরিচর্যা বাবদ প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে।

গত বছর তার বাগানের কিছু গাছে মাল্টা ফলেছিল। ২০ হাজার টাকার মতো বিক্রি হয়েছিল। এবার বাগানের ৫০ ভাগ গাছে মাল্টা ফলেছে। প্রাথমিকভাবে গণনা করে দেখেছেন এ বছর ২৬ হাজার মাল্টা ধরেছে। ৫/৬ টা মাল্টায় এক কেজি হয়।

এতে এ বছর তার বাৎসরিক খরচের টাকা উঠে আসবে। আর ভর্তুকি দিতে হবে না। বাগানের সবগাছে মাল্টা ফললে আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে পুঁজি উঠিয়ে লাভবান হবেন বলে আশা করছেন তিনি।

সাচ্চু জানান, বিষ ও ফরমালিন মুক্ত মাল্টা মানুষের মাঝে পৌঁছে দেওয়াই তাদের মূল উদ্দেশ্য। তাদের মাল্টা বাগানে কোন ধরনের রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না। নিজেদের তৈরি করা জৈব সার ব্যবহার করা হয়।

তিনি জানান, মাল্টা গাছে সাধারণত ফেব্রয়ারি-মার্চ মাসে ফুল আসে। আর মাল্টা পরিপক্ক হয় আগস্ট-অক্টোবরে। ফলন দেখে তিনি মনে করেন বাণিজ্যিকভাবে আমাদের দেশে মাল্টা চাষ সম্ভব।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর ফল বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বাবুল চন্দ্র সরকার জানান, বারি-১ মাল্টা ২০০৪ সালে অবমুক্ত করা হয়। এ জাতটি দেশের প্রতিটি জেলায়ই চাষের উপযোগী এবং ভাল ফলন হচ্ছে।

কালিয়াকৈর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশিষ কুমার কর জানান, প্রান্তিক দেশাল এগ্রোর মাল্টা বাগান তিনি পরিদর্শন করেছেন। বাগানে ফলন ভাল হয়েছে।

এছাড়াও উপজেলার চাপাইর, ফুলবাড়িয়া, দত্তপাড়া এলাকায় বানিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪