মানুষ নিজের স্বার্থ উদ্ধারেই বেশি অগ্রসর। তবু এমন কিছু মানুষ আছেন, যারা অন্যকে নিয়ে ভাবেন, ঝাঁপিয়ে পড়েন তাদের সাহায্যে। চলমান করোনা (কোভিড-১৯) পরিস্থিতিতে এমনই একজন মানবিক যোদ্ধা রংপুর জেলার শ্রেষ্ঠ করদাতা জাহিদুর ইসলাম রুবেল।
রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার এই অকুতোভয় সৈনিক করোনা মহামারিতে পীরগঞ্জ বাসীর কাছে চাঁদ হয়ে ধরা দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করার পর পেশাগত তিনি পীরগঞ্জ সরকারি শাহ্ আব্দুর রউফ কলেজের আইসিটি’র সহকারী অধ্যাপক ও বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী। ব্যস্ততার মাঝেও তিনি মানবপ্রেমের কথা ভুলে যাননি।
স্বেচ্ছায় যারা মানুষের সেবা করেন, তাঁরাই প্রকৃত স্বেচ্ছাসেবী। এমনই একজন সফল স্বেচ্ছাসেবী জাহিদুর ইসলাম রুবেল । অনেক দিন ধরে তিনি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর এই মানবপ্রেমের গুণটিই তাকে করোনার সময়টাতেও ঘরে বসে থাকতে দেয়নি।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে তাঁর চলমান কর্মযজ্ঞ শুরুহ হয়, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এ সময়ে উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করেছেন তিনি। ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছানো, ১৫ টি ইউনিয়নে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি মূলক প্রচারণা লিফলেট বিতরণ, করোনা (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে প্রায় ৩০ হাজার মাস্ক বিতরণ,উপজেলার ইউনিয়ন গুলোতে করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে কর্মহীন দরিদ্র মানুষ এবং বন্যার্তদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, গত ঈদ-উল-আযহা’য় ২ কেজি আতবচাল ও একটি করে মোরগ ৩’শত ৫০ টি দরিদ্র পরিবারের মাঝে পৌঁছে দেওয়া, নিজ উদ্যোগে গাছের চারা প্রদান সহ বিভিন্ন সমাজ সেবা ইত্যাদি কাজ করে যাচ্ছে।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন জানতে চাইলে জাহিদুর ইসলাম রুবেল বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবীরা কখনো ভয় পেয়ে ঘরে বসে থাকে না। সমস্যা হতে পারে জেনেও তাঁরা অন্যের সেবায় কাজ করে যায়। করোনা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা এবং লকডাউনের সময়ে মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়াটা খুব দরকার ছিল, যাতে সবাই নিজ বাড়িতেই অবস্থান করে লকডাউন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে।’
প্রায় ৬ মাসের এই নতুন অভিজ্ঞতার সময়ে কোনো প্রতিবন্ধকতা আটকাতে পারেনি তাকে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে করোনা পজিটিভ রোগীদের সাহায্য করতে হয়েছে। আক্রান্তদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া, তাদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখা, আক্রান্তদের প্রতিবেশীদের যত্নশীল হতে উদ্বুদ্ধ করেছি।’
‘এই সময়টাতে স্বেচ্ছাসেবী দলের কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ কারণে পরিবার থেকে প্রায়ই বাসায় থাকতে জোর করতো। তবুও নিজের ও পরিবারের আক্রান্ত হওয়ার ভয় আটকে রাখতে পারেনি। বরং এখনও কাজ করে যাচ্ছি এবং করোনা যতদিন থাকবে আমার কাজ করে যাওয়ার ইচ্ছে আছে’, বলেন তিনি।
ব্যক্তি উদ্যোগেও কাজ করেছেন এই যোদ্ধা।
মহামারির কারণে ভবিষ্যতে গরীব অসহায় মানুষের খাদ্য সংকট নিরসনে নিজস্ব খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে বিনামূল্যে গাছের চারা প্রদান করেছেন তিনি।
করোনা মোকাবিলায় এমন মহৎ কাজ করতে পারায় আনন্দিত জাহিদুর ইসলাম রুবেল । তিনি বলেন, ‘কোনো স্বার্থের জন্য নয় বরং দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসি বলেই ছোট থেকে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছি। বাধা-বিপত্তি আসলেও দেশের জন্য ভবিষ্যতেও এমন কাজ করে যেতে চাই।’