কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা
কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারসহ ১৬টি নদ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি ঢুকতে শুরু করেছে নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকায়। এসব এলাকার চারণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদিপশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
জেলার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে ১ হাজার ৫০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও গত একমাসে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে ওই ইউনিয়নে প্রায় ২০০ পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। অন্যদিকে বেগম নুর নাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিও ভাঙনের মুখে রয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে সেটিও নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বাবলু মিয়া বলেন, আমার ইউনিয়নটি ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীর মাঝখানে। পানি বৃদ্ধির ফলে অনেকের নলকূপ তলিয়ে গেছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। তবে এখনো অবস্থা মোটামুটি ভালো আছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকলে পরিস্থিতি মারাত্মক খারাপ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মসালের চর এলাকার কাশেম আলী বলেন, পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাড়ির চারিদিকে পানি। এখনো ঘরে পানি ওঠেনি। তবে ৩-৪ দিন থেকে গরু-ছাগল নিয়ে বিপদে আছি। কেননা সব মাঠ তলিয়ে গেছে গরু-ছাগলকে খাওয়াতে পারছি না। বর্তমানে সবচেয়ে বড় সমস্যা গরু-ছাগলকে নিয়ে।
পানি বৃদ্ধির কারণে নিমজ্জিত হচ্ছে নদ-নদী অববাহিকার মৌসুমী শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। জেলার নাগেশ্বরী, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুর ও কুড়িগ্রাম সদরের নিম্নাঞ্চলের শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বর্তমানে নৌকায় যাতায়াত করছে এখানকার মানুষজন। চর এলাকার নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ জুন) কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিকেল ৩টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার নদীর পানি জেলার ভুরুঙ্গামারীর পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। পানি বৃদ্ধি পেলেও বড় ধরনের বন্যার কোনো শঙ্কা নেই। নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হতে পারে।
বা বু ম / অ জি