স্টাফ রিপোর্টার-
বান্দরবানের রুমা উপজেলায় দুর্গম পাহাড়ের লাইরুনপি পাড়া ও ইডেনপাড়ায় কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সন্ত্রাসীদের আস্তানা ঘিরে রেখেছে যৌথ বাহিনী। এদিকে অভিযানে ক্ষতি এড়াতে স্থানীয় শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশুকে সরিয়ে উপজেলা সদরে নিয়ে আসা হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত থেকে লাইরুনটিপাড়া ও ইডেনপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় অভিযানে নামে যৌথ বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকালে শতাধিক নারী ও শিশুদের নিরাপত্তার জন্য সরিয়ে এনে রুমার লুংঝিরিপাড়ায় অবস্থিত মারমা ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন ভবন ও বাংলা পাহাড়ে অবস্থিত খ্রিস্টান ফলোশিপ অব বাংলাদেশ (সিএফবি) হোস্টেলে রাখা হয়েছে। তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, সকাল থেকেই ওয়েল ফেয়ার ভবনের সামনে বম সস্প্রদায়ের নারী ও শিশুদের জড়ো করা হয়। তবে সেখানে কোনো পুরুষ নেই।।সকাল ৬টা-৭টা থেকে ওয়েলফেয়ার ভবনে শিশু ও নারী জড়ো হতে শুরু করে, সেখানে বয়স্ক পুরুষ ১০ ছিল জন।
জানা গেছে, গত বছরে কেএনএফের ভয়ভীতি ও যৌথ বাহিনীর অভিযানের কারণে জীবন বাঁচাতে ২০২৩ সালের ২৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মারমা সম্প্রদায়ের ৫১টি পরিবারের ১৪০ জন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে মারমা ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনে আশ্রয় নিলে তারা ৮ দিন পর বাড়ি ফিরে যায়। একই বছরের ২০ এপ্রিল রুমার পাইন্দু ইউনিয়নের মুলপিপাড়া থেকে মোট ৪৯ পরিবারের শিশুসহ নারী-পুরুষ মোট ২৩৬ জন একই ভবনে আশ্রয় নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা বাড়ি ফিরে যায়।
উল্লেখ্য,গত ২ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে রুমা উপজেলায় কেএনএফ কর্তৃক সশস্ত্র হামলা, সরকারি কর্মকর্তা ও পথচারীদের জিম্মি করে হামলা, অর্থ লুটের উদ্দ্যেশ্যে সোনালী ব্যাংকে হামলা করে ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র লুট করে নেওয়া হয় এবং ৩ এপ্রিল থানচি উপজেলায় স্থানীয়দের জিম্মি করে গুলি ও দুটি ব্যাংকে লুট এবং রাতে ব্যাপক গোলাগুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে কেএনএফ। এরপর মূলত কেএনএফ দমনে যৌথ অভিযানে নামে যৌথ বাহিনী।
বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় দফায় দফায় ব্যাংকে হামলা, টাকা ও অস্ত্র লুট এবং ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ ও ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের বিভিন্ন ধারায় ৮টি মামলা হয়েছে। কেএনএফের সহযোগী লাল লিয়ান সিয়াম বম ও সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান সমন্বয় চেওসিম বমসহ ১৯ জন মহিলা ও ৩৬ জন পুরুষসহ মোট ৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সস্ত্রাসীদের আস্তানা ঘিরে রাখা ও স্থানীয়দের সরিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে রুমা থানার ওসি মোহাম্মদ শাজাহান জানিয়েছেন, আমরা এই বিষয়ে কাজ করছি, আপনাদের পরে বিস্তারিত জানানো হবে।