করোনা পর্ব যতই দীর্ঘায়িত হচ্ছে, প্রসূতিদের মধ্যে সংক্রমণও বাড়ছে। কপালের ভাঁজবাড়ছে স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিশারদদেরও। ভাবী মায়েদের মধ্যে সংক্রমণ এড়াতে এবংতারপরও তাঁরা সংক্রামিত হলে কী করণীয়, তা নিয়ে বিস্তারিত সরকারি গাইডলাইনইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। ইউনিসেফের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থা এ নিয়ে বিভিন্ন সোশ্যালমিডিয়ায় সচেতনতামূলক প্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা কমছে না ।চিকিৎসকরাজানিয়েছেন, উল্লেখযোগ্যভাবে ৯০ শতাংশের বেশি ক্ষেত্রে কোভিড আক্রান্ত প্রসূতিদেরকোনও উপসর্গ ছিল না। সিজার বা সাধারণ প্রসব হওয়ার পর কারওক্ষেত্রে জ্বর, কারওকাশি, কারও শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বেশকয়েকটি হাসপাতালে দেখা গিয়েছে, গাইনি বিভাগই সংক্রমণের উৎস। উপসর্গ না থাকায়সকলে নিরাপত্তা সরঞ্জাম পরে অপারেশনে না নামায় একের পর এক স্বাস্থ্যকর্মী ওচিকিৎসক পজিটিভ হয়েছেন। অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিতে হয়েছে ওয়ার্ড, লেবার রুম।আমরা হয়ত অনেকেই জানি না, সুগার, হার্টের অসুখ, ক্যান্সারের মতো রোগে যেমনপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে, একইভাবে গর্ভধারণের সময়ও মায়েদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।একে ‘ইমিউনো কম্প্রোমাইজড’ অবস্থা বলা হয়। ফলে সতর্কতা না নিলে সহজেইসংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আমার পরামর্শ, গর্ভাবস্থায় মন ভালো রাখুন, ভালোবই, গান শুনুন, সিনেমা দেখুন, স্ট্রেস বাড়তে দেবেন না। অবশ্যই হাঁটাচলা করুন। পারলেরোজ নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম ও স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ কাজের হতে পারে। আর হাই প্রোটিনডায়েট খান। মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়া ইত্যাদি স্বাস্থ্যবিধি মানা তো আছেই।গর্ভাবস্থায়রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে।তাই মায়েদের করোনা সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে।আমরা দেখছি, সিংহভাগ ক্ষেত্রে উপসর্গ থাকছে না। সিজার বা সাধারণ প্রসব হওয়ার পরশরীরের হর্মোনগত পরিবর্তন হওয়া এবং স্ট্রেস বাড়ায় উপসর্গগুলি দেখা দিতে শুরু করছে।তিনি বলেন, যেভাবে উপসর্গহীনদের সংখ্যা বাড়ছে, এখন ইমার্জেন্সিতে আসা কোনওআসন্নপ্রসবার অবিলম্বে প্রসবের প্রয়োজন হলে তিনি কোভিড পজিটিভ ধরেই আমরাএগচ্ছি। কারণ, ওই পরিস্থিতিতে তো আর কোভিড পরীক্ষার কোনও অবকাশই নেই। ‘ফুলপিপিই’ পরে অপারেশনে নামছি। আর প্ল্যানড বা কিছুদিন বাদে অপারেশনের দিনক্ষণথাকলে ভর্তি করিয়ে পরীক্ষা করে নিচ্ছি। বহু প্রসূতি গোড়ায় উপসর্গহীন থাকছেন। প্রসবেরপর উপসর্গ ধরা পরছে, ধরা পড়ছে কোভিডও।২০০৯ সালে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পরাইনফ্লুয়েঞ্জা প্যানডেমিক (এইচ ১ এন ১)-এর সময়ও বহু মা মহামারীর কবলে পড়েন। এবারআক্রান্ত প্রসূতির সংখ্যা বাড়লেও, কারও ক্ষেত্রে পরিস্থিতি জটিল হয়নি।